টেলিভিশনের পর্দায় যাঁর চেহারা দেখা যায় না, কিন্তু তাঁর কণ্ঠস্বরেই কাঁপে গোটা ঘর—তিনি অতুল কপূর। ভারতের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’-এর পেছনের কণ্ঠস্বর হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। ক্যামেরার আড়াল থেকে থেকেই তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন ঘরের প্রতিটি পরিস্থিতি। প্রতিযোগীরা তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য। বাস্তবে তিনিই ‘বিগ বস’, যদিও দর্শকের চোখের আড়ালে থাকেন সবসময়।
তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই গোপন ‘বিগ বস’ অর্থাৎ অতুল কপূরের আয় কিছু কম নয়। সূত্র বলছে, প্রতিটি মৌসুমের জন্য তিনি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নেন। তুলনায়, তাঁর কাজের সময় খুব কম। তাঁকে কেবলমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সময়েই কণ্ঠ দিতে হয়, যখন ‘বিগ বস’-এর পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশ প্রতিযোগীদের জানাতে হয়।
২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো ‘বিগ বস’ সম্প্রচার শুরু হলে, সেই মৌসুম থেকেই অতুল এই কণ্ঠস্বরের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দীর্ঘ এই পথচলায় নানা তারকা প্রতিযোগী ঘরটির সদস্য হয়েছেন, কিন্তু একবার ভেতরে ঢুকে পড়লেই তাঁদের জীবনের নিয়ম চালায় অতুলের গলা। তাঁর একেকটি বাক্য কখনো হয় উৎসাহের উৎস, আবার কখনো বদলে দেয় খেলোয়াড়দের ভাগ্য।
অতুলের গভীর, দৃঢ় এবং নিয়ন্ত্রক কণ্ঠ বরাবরই প্রশংসিত হয়েছে দর্শকদের কাছে। এমনকি, অনেক দর্শক ‘বিগ বস’ দেখতে শুরু করেন শুধুমাত্র তাঁর কণ্ঠ শুনতেই। তাঁর গলার মধ্যে রয়েছে এক ধরণের মাধুর্য ও কর্তৃত্ব যা শো’র চরিত্রকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়।
তবে শুধু ‘বিগ বস’ নয়, অতুল কপূর তাঁর কণ্ঠ দিয়েছেন হলিউডের অনেক জনপ্রিয় ছবির হিন্দি সংস্করণেও। সেইসব ছবির চরিত্রগুলো তাঁর কণ্ঠে এতটাই জীবন্ত হয়ে ওঠে যে দর্শকরা অনেক সময় ভুলে যান এটি ডাবিং।
এইভাবে, নেপথ্যে থেকেও অতুল কপূর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক ‘আনseen আইকন’ হিসেবে। তাঁর কণ্ঠ এখন একটি ব্র্যান্ড, যা শুধু বিনোদন নয়, একটি অভিজ্ঞতা তৈরি করে। ‘বিগ বস’-এর সফলতার পেছনে তাঁর ভূমিকা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।