Breaking
9 মে 2025, শুক্র

সত্যম ভট্টাচার্য: সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার নেই বলে বাদ পড়লেন, তবুও স্বপ্ন ছাড়েননি ‘বল্লভপুরের রাজা’

‘মিশর রহস্য’, ‘গুমনামী’, ‘নিরন্তর’-এর মতো একাধিক ছবিতে নিজেকে প্রমাণ করার পর এবার বড় পর্দায় নায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে সত্যম ভট্টাচার্যকে। অনির্বাণ ভট্টাচার্য পরিচালিত প্রথম ছবি ‘বল্লভপুরের রূপকথা’-তে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ছবি মুক্তির আগে অভিনেতার মনে এখন উত্তেজনা ও প্রত্যাশার জোয়ার।

সত্যম বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি প্রায় দশ বছর হয়ে গেল। অবশেষে এমন একটি বড় সুযোগ এসেছে, যেখানে আমি মূল চরিত্রে। এটা আমার কাছে অত্যন্ত বিশেষ। আর কিছুদিনের অপেক্ষা, তারপর দর্শকদের প্রতিক্রিয়া জানতে পারব। খুবই উৎকণ্ঠায় আছি।”

‘মন্দার’ ওয়েব সিরিজে সহকারী পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করার সময় থেকেই অনির্বাণ ভট্টাচার্যের সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরেই এসেছিল নতুন ছবির প্রস্তাব। এস্তোনিয়ায় একটি হিন্দি ছবির শ্যুটিং সেরে কলকাতায় ফিরেই অনির্বাণ তাঁকে ‘বল্লভপুরের রূপকথা’-র প্রস্তাব দেন। সত্যম জানালেন, “শুরুতে বিশ্বাসই করতে পারিনি। তখনও বাদল সরকারের মূল নাটকটি পড়া ছিল না। এরপর টানা পাঁচটি অডিশন দিয়েছি। শেষে নির্বাচিত হয়েছি।”

ছবিতে সত্যম অভিনয় করছেন ‘ভূপতি’ চরিত্রে, যা তিনি নিজেই বলছেন তাঁর অভিনয়জীবনের সবচেয়ে কঠিন চরিত্রগুলির একটি। নাট্যচর্চা থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা জন্মেছিল তাঁর। টলিউডে পা রাখার সেই সময়টা একেবারেই সহজ ছিল না। সেই দিনগুলোর কথা মনে করে তিনি বলেন, “ছবির নির্মাণ প্রক্রিয়া আমাকে শুরু থেকেই খুব আকর্ষণ করেছে। সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছি, তবে বরাবরই অভিনয় ছিল আমার প্রথম পছন্দ। কোনোদিন কারও প্রতি অভিমান জমে থাকেনি। শুধু মন দিয়ে নিজের কাজ করে গেছি।”

ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেই গড়ে তুলেছেন নিজের জায়গা। কিন্তু এই যাত্রাপথ সহজ ছিল না। অনেক সময়ই তাঁর চেহারার কারণে কাজ হাতছাড়া হয়েছে বলে জানালেন তিনি। কারও কথায় তিনি নায়কসুলভ নন, তো কেউ বলেছেন তাঁর পেট আছে। সত্যমের মতে, এই সব মন্তব্য তখন মন খারাপ করলেও, এখন তিনি সেসব কথায় পাত্তা দেন না।

আজকের দিনে সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতির গুরুত্ব ইন্ডাস্ট্রিতে বাড়ছে বলেই মনে করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে সত্যম বলেন, “এটা শুধু এখানেই না, মুম্বইতেও আমি এর স্বাদ পেয়েছি। একবার একটি হিন্দি ছবির জন্য অডিশনে নির্বাচিত হয়েছিলাম। তারপর প্রযোজনা সংস্থা আমার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল দেখতে চায়। এরপর আর তারা যোগাযোগ করেনি। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম আসল কারণ।”

সত্যমের এই জার্নি প্রমাণ করে, ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম থাকলে সোশ্যাল মিডিয়ার ফলোয়ার না থাকলেও অভিনয়জগতে নিজের জায়গা করে নেওয়া সম্ভব। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’-র সাফল্য তাঁর কেরিয়ারের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে — এখন শুধু অপেক্ষা দর্শকদের ভালোবাসার।